ক) জনবসতি অঞ্চল চিহ্নিতকরণ
জনবসতি অঞ্চল চিহ্নিতকরণ
উপরের মানচিত্রে বাংলাদেশের তিনটি জনগোষ্ঠীর চিহ্নিত করা হয়েছে যেমন ঢাকা-রাজশাহী এবং ময়মনসিংহ। ঢাকা প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করে ১৫০০ জনের অধিক। এবং রাজশাহী ও ময়মনসিং প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করে ১৫০০ জনের মধ্যে।
খ) অঞ্চল ভিত্তিক জনসংখ্যা বন্টন এর কারন
ক. নিবিড় জনবসতি অঞ্চল:
বাংলাদেশের যে সকল অঞ্চলের জনসংখ্যার ঘনত্ব সর্বাধিক সে সকল অঞ্চলকে নিবিড় জনবসতি অঞ্চল বলে। এ অঞ্চলে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২০০০ জনের অধিক লোক বাস করে। নিবিড় জনবসতি অঞ্চলের সর্বত্র জনসংখ্যার ঘনত্ব সমান নয় বলে একে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।এগুলো হলো অতি নিবিড় বসতি অঞ্চল, নিবিড় বসতি অঞ্চল এবং নাতি নিবিড় বসতি অঞ্চল।
১. অতি নিবিড় বসতি অঞ্চল: রাজধানী ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী ঢাকা জেলায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৮,২৩২ জন লোক বাস করে। আবার ঢাকা জেলার মধ্যে অবস্থিত ঢাকা মহানগরীর জনবসতি সবচেয়ে ঘন। ঘনত্বের দিক দিয়ে ঢাকা মহানগরীর কোতোয়ালী থানা প্রথম স্থানে রয়েছে। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫০০ জন লোক বাস করে। এরপরই রয়েছে সূত্রাপুর থানা। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৮৮২৫০ জন বাস করে। মোহাম্মদপুরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩৭,২২২ জন এবং তেজগাঁয়ে ৩৩,৫৫৫ জন লোক বাস করে (বিবিএস-২০১২)। এছাড়া ঢাকা মহানগরীর অন্যান্য থানাতেও জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যধিক। মহানগরীর বাইরে অবস্থিত সাভার, ধামরাই, দোহার প্রভৃতি থানার জনসংখ্যার ঘনত্ব অপেক্ষাকৃত কম।
অতি নিবিড় বসতি গড়ে উঠার কারণ : ঢাকা রাজধানী শহর হওয়ায় এখানে অতি নিবিড় বসতি গড়ে উঠেছে। সকল প্রকার প্রশাসনিক ও অন্যান্য অফিসের সদর দপ্তর ঢাকায় অবস্থিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষের লক্ষ্যস্থল ঢাকা। ব্যবসাবাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প-কারখানা, কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধা, পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থা, বহুতল ভবনের আধিক্য, ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রভৃতি কারণে এ অঞ্চলটি অতি জনবহুল। ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার উর্বর মৃত্তিকা এবং উৎপাদনশীলতা ও প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
২. নিবিড় বসতি অঞ্চল: যে সকল অঞ্চলে ১,৫০১ থেকে ২,০০০ জন লোক বাস করে সে সকল এলাকা নিবিড় বসতি অঞ্চল হিসেবে গণ্য করা হয়। ঢাকার পরেই জনবহুল অঞ্চল হিসেবে সুপরিচিত নারায়নগঞ্জ। নারায়নগঞ্জ জেলায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪,৩১০ জন লোক বাস করে। নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব সর্বাধিক।
নিবিড় বসতি গড়ে উঠার কারণ: পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা থাকায় এ জেলায় নিবিড় বসতি গড়ে উঠেছে। এখানে অসংখ্য শিল্প-কারখানা রয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। এসব কারণে নারায়নগঞ্জকে ‘প্রাচ্যের ডান্ডি’ বলে অভিহিত করা হতো। এছাড়া ঐতিহাসিকভাবেও এ জেলা গুরুত্বপূর্ণ এবং রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে অবস্থিত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নিবিড় বসতি গড়ে উঠেছে।
৩. নাতি নিবিড় বসতি অঞ্চল : যে সকল অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১০০১ থেকে ১৫০০ জনের মধ্যে সে সকল অঞ্চলকে নাতি নিবিড় বসতি অঞ্চল বলে। গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রংপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, কুষ্টিয়া, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর এবং চট্টগ্রাম জেলা নাতি নিবিড় বসতি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
নাতি নিবিড় বসতি গড়ে উঠার কারণ: চট্টগ্রাম মহানগরীতে জনসংখ্যা ঘনত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ার কারণ সমুদ্রবন্দরের অবস্থান এবং শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার। গাজীপুর জেলাতেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিল্প-কারখানার ব্যাপক প্রসার ঘটায় জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এছাড়া অন্যান্য জেলাসমূহ কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় নাতি নিবিড় বসতি গড়ে উঠেছে।
খ. বিরল জনবসতি অঞ্চল: যে সকল অঞ্চলে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০০০ জনের কম লোক বাস করে সে সকল অঞ্চলকে বিরল জনবসতি অঞ্চল বলে। জনসংখ্যার ঘনত্বের উপর ভিত্তি করে বিরল জনবসতি অঞ্চলকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- নাতি বিরল বসতি অঞ্চল এবং অতি বিরল বসতি অঞ্চল।
১. নাতি বিরল বসতি অঞ্চল: যেসব অঞ্চলে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০১-১০০০ জনের মধ্যে জনসংখ্যার আবাস থাকে সেসব অঞ্চলকে নাতি বিরল বসতি অঞ্চল বলে। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ি, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নড়াইল, পিরোজপুর, ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা প্রভৃতি জেলা নাতি বিরল বসতি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
নাতি বিরল বসতি গড়ে উঠার কারণ : নাতি বিরল বসতি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে নতুনভাবে পলি সঞ্চিত না হওয়ায় এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলক কম হওয়ায় কৃষিজাত দ্রব্যের উৎপাদন অপেক্ষাকৃত কম হয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইভাবে সিলেট ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের হাওর বা বিল এলাকায় জলমগ্নতার জন্য জনবসতি কম। বৃহত্তর দিনাজপুর, কুষ্টিয়া ও যশোরের কোনো কোনো অংশে জমি অনুর্বর হওয়ায় সেসব জায়গায় জনবসতি কম। উপকূলীয় জেলাসমূহে লবণাক্ততা, আলো ছায়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বেশি থাকায় নাতি বিরল বসতি গড়ে উঠেছে। এছাড়া শিল্প-কারখানা এবং ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার কম থাকার কারণেও জনবসতি নাতি বিরল।
২. অতি বিরল বসতি অঞ্চল: যে সকল অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রতি বর্গকিলোমিটারে ০-৫০০ জন, সেসব এলাকাকে অতি বিরল বসতি অঞ্চল বলে। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, সিলেট ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চল, মধুপুর ও বাওয়ালের গড়, সুন্দরবন, বরগুনা, পটুয়াখালি এবং বাগেরহাট জেলা অতি বিরল বসতি অঞ্চলভুক্ত। পাহাড়ি জেলাগুলোর মধ্যে বান্দরবানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৭ জন, রাঙামাটিতে ৯৭ জন, খাগড়াছড়িতে ২৩৩ জন লোক বাস করে।
অতি বিরল বসতির কারণ: পাহাড়িয়া অঞ্চলে অধিক বৃষ্টিপাত, অনুর্বর মৃত্তিকা, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা, কষ্টসাধ্য জীবনযাত্রা অতি বিরল বসতির প্রধান কারণ। পার্বত্য বালুকাময়, অসমতল ও জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চলে জীবিকা নির্বাহ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কষ্টসাধ্য হওয়ায় জনবসতি কম গড়ে উঠেছে। আবার মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় অঞ্চলে অনুর্বর জমিতে কৃষিকাজের সুবিধা না থাকায় জনবসতি কম। একইভাবে সুন্দরবনের বিস্তৃত লবণাক্ত বনাঞ্চলে অতি বিরল বসতি দেখা যায়।
গ) জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির প্রভাব
১. কৃষি জমি হ্রাস : জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কৃষি জমি হ্রাস পায়। দেশে বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭ শতাংশ। প্রতি বছর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও দেশের আয়তন বাড়ছে না। ফলে অতিরিক্ত জনসংখ্যার অবকাঠামো নির্মাণে কৃষি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া পরিবারের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জমির বিভক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আইল দেওয়ার কারণে জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এতে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ফলে কৃষি প্রধান এদেশের কৃষি জমির উপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে।
২. চাকুরি ও কর্মসংস্থানে প্রভাব এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি: অতিরিক্ত জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাকুরি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এতে চাকুরি সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কর্মসংস্থানের উপর প্রভাব পড়ছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাকুরি ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পারলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়। আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের বেকার লোক রয়েছে। যেমনশিক্ষিত বেকার, অশিক্ষিত বেকার, স্থায়ী বেকার, অস্থায়ী বেকার, ঋতুভিত্তিক বেকার প্রভৃতি। সুতরাং অতিরিক্ত জনসংখ্যার ফলে বেকার লোকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে এবং বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা দেখা দিবে।
৩. খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতা: জীবনধারনের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি অত্যাবশ্যক। জনসংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধির ফলে বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের সংস্থান করা দেশীয় উৎপাদন দ্বারা দূরুহ হয়ে পড়ে। এতে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয় এবং বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়, যা দেশীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। এছাড়া বিপুল জনগোষ্ঠির পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সংস্থান করা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ে। এতে শিশু অবস্থা থেকে অনেকেই অপুষ্টির শিকার হয়। বিশেষ করে বস্তি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী নিম্ন আয়ের মানুষ অপুষ্টির শিকার বেশি হয়ে থাকে। ফলে সমাজের একটি অংশ অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় এবং দক্ষ জনশক্তি হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে না।
৪. বাসস্থানের উপর প্রভাব: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাসস্থানের সমস্যাও বৃদ্ধি পায়। বাড়তি জনসংখ্যার জন্য অতিরিক্ত বাসস্থানের প্রয়োজন হয়। বাসস্থানের সংস্থান করতে গিয়ে কৃষি ও অকৃষি জমি ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে বাসস্থানের সংকট বেশি। শহরে বসবাসকারী বেশিরভাগ লোকের শহরে নিজস্ব ঘরবাড়ি নেই। এছাড়া শহরে ছিন্নমুল মানুষের সংখ্যাও কম নয়। এসব ছিন্নমূল মানুষ রেললাইন, রাস্তা বা ফুটপাতে বসবাস করে। যা সকল মানুষের মৌলিক অধিকার বাসস্থানের উপর প্রভাব পড়ে।
৫. সুপেয় পানির উপর প্রভাব: জীবনধারনের জন্য আবশ্যকীয় উপাদান সুপেয় পানি। দেশের বিভিন্ন স্থানে আর্সেনিকযুক্ত পানি, উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত পানি, নগর এলাকায় বিশেষ করে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল এবং চট্টগ্রামে জনসংখ্যার অব্যাহত চাপ থাকায় বর্ধিত জনগোষ্ঠির জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার উপর প্রভাব পড়ে। এছাড়া দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলেও সুপেয় পানি সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়ে। অদূর ভবিষ্যতে অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ঘ) প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনসংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক
যে সম্পদ মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না প্রাকৃতিক থেকে প্রদত্ত তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জনসংখ্যার মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান।
১) কৃষি জমি দিনদিন বাংলাদেশে আবাদ যােগ্য কৃষি জমি কমে যাচ্ছে ঘনবসতির কারণে। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বেড়েই চলছে কিন্তু কৃষি জমির পরিমাণ তাে আর বাড়ছে না। তাই কৃষিজমির উপর তৈরি হচ্ছে বাসস্থান।
২) বনজ সম্পদ দ্রুত হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রতিনিয়ত বনাঞ্চল কেটে আবাসস্থল তৈরি করা হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের বনজ সম্পদ গুলাে বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে।
৩) নদ-নদী বাংলাদেশকে বলা হতাে ১৩ শত নদীর দেশ। নদীমাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশের বহু নদী হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া একটি নদীর জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদী। অতিরিক্ত জনসংখ্যার মৌলিক চাহিদা মেটাতে। শিল্প-কারখানা বেশি বেশি প্রস্তুত করা হয়েছে শিল্প-কারখানা ও ঘরবাড়ি নির্মাণের বর্জ আবর্জনা সব বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে নদী নদী টাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। বুড়িগঙ্গা নদীর মতাে বহু নদী হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই দেশের বুকে থেকে।
৪) প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদঃ প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর, চিনামাটি, তামা, কঠিন, শিলা সিলিকা বালু, গন্ধক ইত্যাদি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ।
বাংলাদেশ যে সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদ গুলাে আছে সেগুলাের সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা খুবই ব্যয়বহুল যেগুলাে উত্তোলনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার মৌলিক চাহিদা মেটাতে গিয়ে | দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক। তাই প্রাকৃতিক সম্পদ গুলাে উত্তোলন করার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।