Class 9 18th week Assignment 2021 has been published. This assignment is published today. Bangla and ICT have been selected for this week. Students will create assignment solutions for two subjects and submit them to their respective schools.
Get Last Week Assignment: Class 9 17th Week Assignment 2021
Institutional activities have been closed in Bangladesh for a long time. In this situation, assignment activities have been started to keep the students connected with education. Through this the Class Eight syllabus will be completed. Students are being given two assignments every week. Students are writing their answers and submitting them to their respective schools. Already 16 assignments have been published for Class 9 students. Assignments will continue to be published every week.
Class 9 18th week Assignment 2021
Class 9 18th week assignment 2021 has been published on 21 September 2021. This week's assignment activities will start from 22 September. It will continue for a week. The 18th week assignment will be published at the end of the 18th week assignment.
Class 9 18th week Physics Assignment 2021
Class 9 18th week Physics Assignment Answer 2021
Class Nine 18th Week Science Group Physics Subject Assignment Answer 2021ঘটনা:- ১রাজধানীর গুলিস্তানে রাস্তা পারের সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ইভা আক্তার (১৮) নামে এক পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ওই কিশোরী গুরুতর আহত হন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘাতক কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে।
নিহতের স্বামী মো. রাসেল বলেন, খবর পেয়ে মিটফোর্ডে গিয়ে স্ত্রী ইভার মরদেহ শনাক্ত করি। ইভা আলু বাজার এলাকায় আল ইনসাফ গার্মেন্টসে অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি বলেন, ইভা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাবে, এজন্য ছেলে-মেয়ের জামাকাপড় কিনতে গুলিস্তানে যান। সেখানে রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ইভা কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ইউসুফ মিয়ার মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামে। বংশাল আলু বাজার এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন তিনি। তার একটি ছেলে রয়েছে।ঘটনা:- ২দেশে ছুটিতে গিয়েছিলেন আরব আমিরাতপ্রবাসী চট্টগ্রামের হাটহাজারী শহীদুল ইসলাম (৩৫)। করোনায় আকাশ পথে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ফেরা হয়নি তার। অপেক্ষা করছিলেন বিমানবন্দরে করোনা র্যাপিড টেস্ট ল্যাব স্থাপন হলে তবেই ফিরে আসবেন কর্মস্থলে। কিন্তু শহীদুল ইসলামের আর দুবাই ফেরা হলো না।
গত শনিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এই প্রবাসী। শহীদ হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী নুরুজ্জামাম চৌধুরী বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, গত শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে বাঁশখালীর চাম্বল দারুল উলুম আইনুল ইসলাম মাদরাসার সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আবদুল মাবুদ (৩৭) নামের আরও একজন।
প্রথমে তাদের বাঁশখালীর স্কয়ার ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শহীদুল ইসলাম মারা যান।
চমেক হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম বলেন, চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে শহীদের মৃত্যু হয়।
হাটহাজারীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ আলী বলেন, শহীদুল ইসলাম কিছুদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে দেশে আসেন। কয়েকদিন পর দুবাই চলে যাওয়ার কথা ছিল। সেজন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন তিনি।ঘটনা:- ৩চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেডের আউটার রিংরোডে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় এক শিশু নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া একটার দিকে আউটার রিংরোডের আকমল আলী সড়ক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই শিশুর নাম মো. তুহিন (৮)। সে আকমল আলী সড়ক এলাকার নুরুল আবছারের ছেলে। নুরুল আবছার ওই এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ইকবাল মাহমুদ প্রথম আলোকে জানান, ওই শিশু সড়কের পশ্চিম থেকে পূর্ব পাশে পার হচ্ছিল। এ সময় ঢাকামুখী একটি কাভার্ড ভ্যান বেপরোয়া গতিতে এসে শিশুটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়।
এদিকে ওই শিশুর মৃত্যুর প্রতিবাদে ঘটনার পরপরই বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ করেন। সড়কের মাঝখানে পড়ে থাকা শিশুর লাশ কাপড় দিয়ে ঢেকে দুই শতাধিক লোক সেখানে বিক্ষোভ করেন। পরে বেলা দুইটার দিকে ইপিজেড থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে সরিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
সড়কের মাঝখানে পড়ে থাকা শিশুর লাশ কাপড় দিয়ে ঢেকে দুই শতাধিক লোক সেখানে বিক্ষোভ করেনইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় ব্যক্তিরা ১০ মিনিটের মতো সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। তবে ওই কাভার্ড ভ্যান শনাক্ত করা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই সড়কে প্রতিটি গাড়ি ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে। আবার কখনো কখনো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সড়কটির একমুখী লাইন বন্ধ করে অপরমুখী লেন দিয়ে উভয় দিকে গাড়ি চালনা করায়। এতে করে এলোমেলোভাবে গাড়ি চলতে থাকে। ফলে সপ্তাহের প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের ওই অংশে গতিরোধক অথবা ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তাঁরা।ঘটনা:- ৪হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় বাসচাপায় ভাইবোনসহ অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অপর চারজন। আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার আন্দিউড়া এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তিনজন হলেন মাধবপুর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কুদ্দুস আলীর শিশুপুত্র মোশারফ (৪), শিশুকন্যা রূপা আক্তার (১২) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতবর্গ গ্রামের মধু দাস (২৮)। তাঁরা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। আহত অপর চারজনের নাম প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।বিজ্ঞাপন
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকজন যাত্রী নিয়ে উপজেলার আন্দিউড়া থেকে একটি অটোরিকশা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে আন্দিউড়া এলাকায় উম্মেতুনেছা উচ্চবিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিলেটগামী একটি যাত্রীবাহী বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে শিশু মোশারক ও তরুণ মধু দাস মারা যান। আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু রূপা আক্তার মারা যায়।
হবিগঞ্জ–শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর বাসচালক ও তাঁর সহকারীকে আটক করা হয়েছে। লাশ তিনটি পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।ঘটনা:- ১ ,২,৩,৪ এর সকল প্রকার কারন
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ : সড়ক দুর্ঘটনার অনেক কারণ বিদ্যমান। নিচে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কয়েকটি কারণ আলোচনা করা হলো :১. অতিরিক্ত গতি এবং ওভারটেকিং : সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হচ্ছে গাড়িগুলোর অতিরিক্ত গতিসীমা। অসাবধানতার সঙ্গে অতিরিক্ত গতিতে অন্য একটি চলমান গাড়িকে ওভারটেকের চেষ্টাই সড়ক দুর্ঘটনার একটি অন্যতম কারণ। পুলিশ রিপোর্টেও বেশির ভাগ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে অতিরিক্ত গতি এবং চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো।২. অপ্রশস্ত পথ : অপ্রশস্ত পথ ব্যবস্থাও বাংলাদেশের অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ঢাকা থেকে যাতায়াতের সবচেয়ে ব্যস্ত পথ ঢাকা-আরিচা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রশস্ত না হওয়াতে এ দুটি পথেই দুর্ঘটনা এবং হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঘটে।৩. ওভারলোডিং : ‘ওভারলোড’ মানে পরিমিতির বেশি মাল বহন করা। বেশি ওজনের মালামাল বহন করে গতি সীমা ছাড়িয়ে প্রতিটি ট্রাকই এক একটি যন্ত্রদানব হয়ে উঠে। এর ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালকরা প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটায়।৪. আইন অমান্য : সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ আইন অমান্য করে গাড়ি চালানো। জরিপে দেখা গেছে, ৯১ শতাংশ চালক জেব্রা ক্রসিংয়ে অবস্থানরত পথচারীদের অধিকার আমলই দেয় না। পাশাপাশি ৮৪ ভাগ পথচারী নিয়ম ভেঙে রাস্তা পার হয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে শতকরা ৯৪ জন রিকশাচালক ট্রাফিক আইন ও নিয়মের প্রাথমিক বিষয়গুলোও জানে না। তারা জানে না ডানে বা বাঁয়ে যেতে হলে কি সংকেত দিতে হবে। কোথায় কিভাবে মোড় নিতে হবে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।৫. ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা : বাংলাদেশে সড়ক পথের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার। এসব সড়ক ও মহাসড়কে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল করছে। কেবল রাজধানী ঢাকায় বাস মিনিবাস, প্রাইভেটকার, জিপ, পিকআপ, ট্রাক, অটোরিক্সা ও মটর সাইকেল মিলিয়ে কয়েক লক্ষ যানবাহন চলাচল করে। এছাড়াও বৈধ-অবৈধ রিকশার সংখ্যা কয় লক্ষ তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু এই বিশাল যানবাহন বাহিনীকে সুশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে আনার মতো ট্রাফিক ব্যবস্থা এদেশে আজও গড়ে উঠেনি।সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি : সড়ক দুর্ঘটনার ফলাফল কেবল মানুষের মৃত্যুর ক্ষতি নয়, অপূরণীয় আরো অনেক ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে দেয় সাধারণের জীবনে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক মানুষ প্রাণে বেঁচে থাকে বটে, কিন্তু জীবনের স্বাভাবিক গতি তারা হারিয়ে ফেলে চিরকালের মতো। পঙ্গুত্ব, শারীরিক বৈকল্য আর যন্ত্রণা ও বেদনার ভার বহন করে বেঁচে থাকা সেই সব মানুষের সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়।পুলিশের এফআইআর (FIR মানে First Information Report) অনুযায়ী ২০১৪ সালে শুধু মহাসড়কগুলোতেই ২ হাজার ২৭টি দুর্ঘটনা ঘটে এবং এতে ২ হাজার ৬৭ জন নিহত হয় এবং অন্তত ২ হাজার জন আহত হয়। এটা কেবল পুলিশের নিকট নথিভুক্ত মহাসড়কগুলোর দুর্ঘটনার হিসাব। মহাসড়ক ছাড়া অন্যান্য সড়কে, পুলিশের কাছে নথিভুক্তহীন অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশে মহাসড়কসহ নিহতের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ১২-২০ হাজার জন। সম্প্রতি এক জরিপ থেকে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৫% থেকে ৩০% শয্যায় দুর্ঘটনা কবলিত রোগীদের ভর্তি করতে হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সৃষ্টি করছে অপ্রত্যাশিত চাপ। এর ফলে স্বাস্থ্যখাতে সীমিত সম্পদের অনেকখানিই চলে যায় সড়ক দুর্ঘটনার আহতদের সেবায়।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায় : নিঃশব্দ আঁততায়ীর মতো প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের চার হাজার স্বজনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু এ মৃত্যুকে তো আমরা ঠেকাতে পারি। এজন্য প্রয়োজন একটু সচেতনতা, ধৈর্য, সতর্কতা আর ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ। যেসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার প্রত্যেকটি কারণই প্রতিরোধযোগ্য। তাই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য করণীয় হলো :১. বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ : সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো গাড়িগুলোর বেপরোয়া গতি এবং ওভারটেকিং করার প্রবণতা। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা বেশি দেখা যায় ট্রাক, মিনিবাস আর দূরপাল্লার বাস চালকদের মধ্যে। এসব গাড়ির চালকগণ ভুলে যায় বেশ কিছু মানুষের জীবন কিছু সময়ের জন্য তাদের জিম্মাদারিতে রয়েছে। চালকগণ একটু সহনশীল হলে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোজনিত সড়ক দুর্ঘটনা সহজেই প্রতিরোধ করা যায়।২. ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ : ট্রাফিক আইনের যদি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যদি কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক কমে যাবে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।৩. লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতি প্রতিরোধ : সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করার জন্য গাড়ির লাইসেন্স ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমানে দেখা যায় লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমানে দেখা যায় লাইসেন্স প্রদানে জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ অনভিজ্ঞ ড্রাইভারদের হাতে ছেড়ে দেন নিরীহ যাত্রীদের ভাগ্য। তাই গাড়িচালক ও গাড়ির লাইসেন্স প্রদানে সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন করে তা কার্যকর করতে হবে।
Class 9 18th week Science Assignment 2021
Class 9 18th week Science Assignment 2021
Class Nine 18th Week Humanities Group Science Subject Assignment 2021ক) বুড়িগঙ্গা নদীর পানি মাছসহ অন্যান্য জীব বসবাসের জন্য উপযুক্ত কি না? ব্যখ্যা কর।দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্যের কোঠায় সীমাহীন দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা এখন মৃত নদী । এ নদীর পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্যের কোঠায় । পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে , মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী বসবাসের জন্য প্রতি লিটার পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ৫ মিলিগ্রাম বা তার বেশি থাকা প্রয়ােজন ।
অন্যদিকে দ্রবীভূত হাইড্রোজেনের মাত্রা কমপক্ষে ৭ মিলিগ্রাম থাকা উচিত । অথচ বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ দশমিকের ঘরে । এ অবস্থায় বুড়িগঙ্গায় প্রাণের অস্তিত্ব টিকে থাকার কোনাে সম্ভাবনা নেই । আমাদের পরিবেশে যে সকল প্রাণী আছে তাদের মধ্যে জলজ প্রাণীর জন্য পানির প্রয়ােজনীয়তা সবচেয়ে বেশি । জলজ প্রাণী জলে জলজ পরিবেশ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে । জলেই বংশবিস্তার করে এবং বেশিরভাগ জলজ প্রাণী জল থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়ােজনীয় অক্সিজেন পেয়ে থাকে । জলজ প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় মাছ । মাছ পানি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকে , পানিতে বংশ বৃদ্ধি করে এবং মাছ ফুলকার সাহায্যে পানিতে দ্রবণীয় অক্সিজেন গ্রহণ করে ।
শহরের ঘরবাড়ি ও নর্দমার ময়লা আবর্জনা এবং শিল্প কারখানা থেকে নির্গত প্রাণী ও উদ্ভিদ আবর্জনাগুলাে হচ্ছে জৈব আবর্জনা । সবচেয়ে বেশি শিল্পজাত বর্জ্য নির্গত হয় চিনি , খাবার , কাগজ ও চামড়ার কলকারখানা থেকে ।
ওই সকল জৈব পদার্থ পার্শ্ববর্তী জলাধার ও নদনদীর পানিকে দূষিত করে । খনি ও কলকারখানার ময়লা আবর্জনা , তৈল উত্তোলন ও পরিশােধন ক্ষেত্র , কৃষি ক্ষেত্র ইত্যাদি উৎস থেকে বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক পদার্থ পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে । পানিতে পচনশীল জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি হয় , সেগুলােকে বিশ্লিষ্ট করার জন্য তত অধিক পরিমাণ অক্সিজেনের প্রযােজন হওয়ায় পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের হ্রাস পায় ; যা জলজ প্রাণীর জীবনধারণের জন্য খুবই ক্ষতিকর ।
এমতাবস্থায় জলজ জীবের মৃত্যুও ঘটতে পারে । আর এ কারণেই বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষিত হচ্ছে এবং বুড়িগঙ্গা নদীতে মাছের পরিমাণ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে । জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন , বুড়িগঙ্গার বিষাক্ত পানি ও উৎকট গন্ধ থেকে আশপাশের এলাকার জনগােষ্ঠীর মধ্যে চর্মরােগ , শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রােগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুবই বেশি । তাই বলা যায় বুড়িগঙ্গার বুড়িগঙ্গা নদীর পানি সহ অন্যান্য জীবের বসবাসের অনুপযুক্ত ।
খ) বুড়িগঙ্গার পাড়ে যদি কোন ফসলী জমি থাকে তাহলে তার সেচ কার্যক্রম কি বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে করা সম্ভব? তােমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
পানি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজ থেকে শুরু করে কৃষি শিল্প ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে । তাই পানির নির্দিষ্ট মান যদি থাকে তবে জীববৈচিত্র্য বা পরিবেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর হবে , তেমনি কৃষিক্ষেত্রে এর ব্যবহার হবে ক্ষতিকর । কৃষিতে সেচকাজে খাল বিল , নদী বা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহৃত হয় । কৃষিতে লবণাক্ত পানি ব্যবহার করা যায় না ।শহরের ঘরবাড়ি ও নর্দমার ময়লা – আবর্জনা এবং শিল্প কারখানা থেকে নির্গত শিল্পজ বর্জ ; বিশেষ করে চামড়ার কারখানা থেকে নির্গত আবর্জনা বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষিত করছে । শিল্প বর্জ্য দিয়ে দূষিত পানি সেচ কাজে ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা নষ্ট করে দিতে পারে ।সেই সাথে উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় । সুতরাং বলা যায় , বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে ফসলি জমিতে সেচ কার্যক্রম করা সম্ভব নয় ।গ) বুড়িগঙ্গাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় জনগনের সহায়তায় তুমি কি করতে পারাে? উপস্থাপন কর।পানির অপর নাম জীবন । পানি ছাড়া একদিনও চলা আমাদের পক্ষে | সম্ভব নয় । প্রতিদিন প্রায় সব ধরনের কাজে আমরা পানি ব্যবহার করে থাকি । আবার বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ । কৃষির উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় । আর এই কৃষিকাজে সেচের জন্য দরকার হয় পানি । অর্থাৎ পানি ছাড়া কোনভাবেই উন্নয়ন করা সম্ভব নয় । উন্নত বিশ্বের প্রতিটি দেশ শিল্পে অত্যন্ত উন্নত । এমন কোন শিল্প কারখানা নেই , যেখানে পানির প্রয়ােজন হয় না । তাই বলা হয়ে থাকে , উন্নয়ন ও পানি ; একে অপরের পরিপূরক । মানব সৃষ্ট বিভিন্ন কারণে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষিত হয়ে থাকে । এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য হচ্ছে ঢাকা শহরের বাসাবাড়ী ও নর্দমার ময়লা আবর্জনা এবং চামড়া কারখানা থেকে নির্গত আবর্জনা বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষিত করছে ।বুড়িগঙ্গাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় জনগণের যতায় আমি যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি তা নিম্নে হলাে১. সর্বস্তরের মানুষকে পানি দূষণ সম্পর্কে সঠিক প্রয়ােজন এবং এর প্রতিক্রিয়ার ভয়াবহ চিত্র জনসাধারণের নিকট তুলে ধরা প্রযােজন । প্রয়ােজন বােধে লিফলেট , পােস্টার , সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম ( যেমন- ফেইসবুক ) বা জাতীয় প্রচার মাধ্যমগুলাে ব্যবহার করে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি ।২. শহর ও বাসা বাড়ির আবর্জনা নর্দমার বর্জ্য , নদ- -নদী , খাল বিল গড়িয়ে পড়ার আগে শাে করা উচিত । এ জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির এবং প্রয়ােজনবােধে কমিটি করে আইন তৈরি করা ও আইন অমান্যকারীকে আর্থিক রিমানার ব্যবস্থা করা।৩. নদীর পানির বিক প্রবাহ অব্যাহত রাখা অত্যাবশ্যক । নদীর তলদেশে যাতে জমতে না পারে সে জন্য নিয়মিত ড্রেজিং প্রয়োজন৪.কৃষি জমিতে জৈব সার এবং পরিমিত পরিমাণে রাসায়নিক সার প্রয়ােগ করা উচিত । ফলে অতিরিক্ত সার জলাশয় এর পানিকে দূষিত করতে পারবে না ।৫. শিল্প ও কলকারখানার বর্জ্য পার্শ্ববর্তী জলাশয় ও নদ – নদীতে পড়ার পূর্বে শােধন করা প্রয়ােজন ।৬. খােলা মাটিতে রাসায়নিক দ্রব্য , রং অথবা গাড়ির তেল কখনাে ফেলা উচিত নয় । কেননা এ সমস্ত দ্রব্য মাটি চুয়িয়ে ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত করে ।৭. কীটনাশক , ছত্রাক নাশক ও আগাছানাশক এর যথেচ্ছা ব্যবহার বন্ধ করা উচিত । এক্ষেত্রে কৃষকদের সাথে আলােচনা করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে ।৮. রান্নাঘরের নিষ্কাশন , নালায় ও টয়লেটে রাসায়নিক বর্জ্য ফেলতে শহরের মানুষদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি ।জনসচেতনতাই পারে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণ রক্ষা করতে । সর্বোপরি , সকল স্থানীয় লােকদের সহায়তায় বুড়িগঙ্গাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে ।
Class 9 18th week Accounting Assignment 2021
Class 9 18th week Bangladesh and Global studies Assignment 2021
Class 9 18th week Bangladesh and Global studies Answer Assignment 2021
Class Nine 18th Week Science Group Bangladesh and Global studies subject Assignment Answer 2021তারিখ : ০১/১০/২০২১ ইং ।
বরাবর ,
প্রধান শিক্ষক
ক উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট।
বিষয় : প্রাচীন বাংলার রাজা/ রাজবংশসমূহের বংশানুক্রমিক তালিকা তৈরি করে ঐ যুগের শাসন ব্যবস্থার একটি প্রতিবেদন।
জনাব,বিনতি নিবেদন এই যে , আপনার আদেশ নং বা.উ.বি.৩৫৫-১ তারিখ : ২৮/০৯/২০২১ ইং অনুসারে উপরােক্ত বিষয়ের উপর আমার স্বব্যখ্যাত প্রতিবেদনটি নিন্মে পেশ করলাম । প্রাচীন বাংলার রাজা/ রাজবংশসমূহের বংশানুক্রমিক তালিকা তৈরি করে ঐ যুগের শাসন ব্যবস্থামাৎসান্যায় ও পাল বংশ (৭৫০ খ্রিঃ – ১১৬১ খ্রিঃ)শশাংকের মৃত্যুর পর বাংলার ইতিহাসে এক দুর্যোগপূর্ণ অন্ধকারময় যুগের সূচনা হয়। দীর্ঘদিন বাংলায় কোন যোগ্য শাসক ছিলেন না। ফলে, রাজ্যে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা দেয়। একদিকে হর্ষবর্ধন ও ভাস্করবর্মণের হাতে গৌড় রাজ্য ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়, অন্যদিকে ভূ-স্বামীরা প্রত্যেকেই বাংলার রাজা হওয়ার কল্পনায় একে অন্যের সাথে সংঘাতে মেতে উঠে।
কেন্দ্রীয় শাসন শক্ত হাতে ধরার মতো তখন কেউ ছিলেন না। এ অরাজকতার সময়কালকে পাল তাম্রশাসনে আখ্যায়িত করা হয়েছে ‘মাৎসান্যায়’ বলে। পুকুরে বড় মাছ ছোট মাছকে ধরে গিলে ফেলার মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে বলে ‘মাৎসান্যায়’। বাংলার সবল অধিপতিরা এমনি করে ছোট ছোট অঞ্চলগুলোকে গ্রাস করছিল। এ অরাজকতার যুগ চলে একশত বছরব্যাপী। আট শতকের মাঝমাঝি এ অরাজকতার অবসান ঘটে পাল রাজত্বের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
গোপালের মৃত্যুর পর ধর্মপাল (৭৮১-৮২১ খ্রিঃ)বাংলার সিংহাসনে বসেন। পাল রাজাদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। বাংলা ও বিহারব্যাপী তাঁর শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। উত্তর ভারতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ সময়ে তিনটি রাজবংশের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছিল। একটি বাংলার পাল, অন্যটি রাজপুতনার গুর্জরপ্রতিহার ও তৃতীয়টি দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট। ইতিহাসে এ যুদ্ধ ‘ত্রি-শক্তির সংঘর্ষ’ বলে পরিচিত। আট শতকের শেষ দিকে এ যুদ্ধ শুরু হয়। প্রথম যুদ্ধ হয় ধর্মপাল ও প্রতিহার বংশের রাজা বৎসরাজার মধ্যে। এ যুদ্ধে ধর্মপাল পরাজিত হন। তবুও ধর্মপাল এ সময় বাংলার বাইরে বেশকিছু অঞ্চল জয় করেছিলেন। তিনি বারাণসী ও প্রয়াগ জয় করে গঙ্গা-যমুনার মধ্যবর্তী অঞ্চল পর্যন্ত রাজ্য বিস্তার করেন। ত্রি-শক্তির সংঘর্ষের প্রথম দিকে ধর্মপাল পরাজিত হলেও তাঁর বিশেষ কোন ক্ষতি হয়নি। কারণ, বিজয়ের পর রাষ্ট্রকূটরাজ দাক্ষিণাত্যে ফিরে যান।
এ সুযোগে ধর্মপাল কনৌজ অধিকার করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই প্রতিহাররাজ দ্বিতীয় নাগভট্ট কনৌজ দখল করেন। ফলে, ধর্মপালের সাথে তাঁর যুদ্ধ বাঁধে। এ যুদ্ধে ধর্মপাল পরাজিত হন। এ পরাজয়েও ধর্মপালের কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ, পূর্বের মতো রাষ্ট্রকূটরাজ তৃতীয় গোবিন্দ উত্তর ভারতে আসেন এবং দ্বিতীয় নাগভট্টকে পরাজিত করেন। প্রতিহার রাজের পরাজয়ের পর ধর্মপালও তৃতীয় গোবিন্দের নিকট আত্মসমর্পণ করেন। অতঃপর রাষ্ট্রকূটরাজ তাঁর দেশে ফিরে গেলে ধর্মপাল পুনরায় উত্তর ভারতে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ লাভ করেন। কেহ কেহ মনে করেন, ধর্মপাল নেপালও জয় করেছিলেন।
ধর্মপাল প্রায় ৪০ বৎসর (৭৮১-৮২১ খ্রিঃ)পিতার মতো ধর্মপাল বৌদ্ধ ছিলেন। পাল রাজাদের মধ্যে তিনিই সর্বোচ্চ সার্বভৌম উপাধি পরমেশ্বর, পরমভট্টারক মহারাজাধিরাজ ধারণ করেছিলেন। ভাগলপুরের ২৪ মাইল পূর্বে তিনি একটি বৌদ্ধ বিহার বা মঠ নির্মাণ করেন। বিক্রমশীল তাঁর দ্বিতীয় নাম বা উপাধি অনুসারে এটি ‘বিক্রমশীল বিহার’ নামে খ্যাত ছিল। নালন্দার মতো বিক্রমশীল বিহারও ভারতবর্ষের সর্বত্র ও ভারতবর্ষের বাইরে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। নবম শতক থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত এটি সমগ্র ভারতবর্ষের একটি বিখ্যাত বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
তিব্বতের বহু বৌদ্ধ ভিক্ষু এখানে অধ্যয়ন করতে আসতেন এবং এখানকার অনেক প্রসিদ্ধ বৌদ্ধ আচার্য তিব্বতে বিশুদ্ধ বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন। নাটোর জেলার পাহাড়পুর নামক স্থানেও ধর্মপাল এক বিশাল বিহার প্রতিষ্ঠা করেন। ইহা সোমপুর বিহার নামে পরিচিত। এই স্থাপত্য কর্মটি জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্বসভ্যতার নিদর্শন হিসেবে (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ) স্বীকৃত হয়েছে। এর ন্যায় প্রকাণ্ড বিহার ভারতবর্ষের আর কোথাও এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। ওদন্তপুরেও (বিহার) তিনি সম্ভবত একটি বিহার নির্মাণ করেন। তারনাথের মতে, ধর্মপাল বৌদ্ধধর্ম শিক্ষার জন্য ৫০টি শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
রাজা হিসেবে সকল ধর্মালম্বী প্রজার প্রতি সমান পৃষ্ঠপোষকতা পাল যুগের একটি বৈশিষ্ট্য। তাই নিজে বৌদ্ধ হলেও অন্যান্য ধর্মের প্রতি ধর্মপালের কোনো বিদ্বেষ ছিল না। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, রাজার ব্যক্তিগত ধর্মের সহিত রাজ্য শাসনের কোনো সম্পর্ক নেই।
নারায়ণপাল (৮৬৬-৯২০ খিস্টাব্দ)তিনি একজন দুর্বল উদ্যমহীন শাসক ছিলেন। ফলে, তাঁর রাজত্বকালে পাল সাম্রাজ্যের সীমা ছোট হতে থাকে। নারায়ণ পালের পর একে একে পাল সিংহাসনে বসেন রাজ্যপাল, দ্বিতীয় গোপাল ও দ্বিতীয় বিগ্রহপাল। এঁরা আনুমানিক ৯২০ হতে ৯৯৫ খিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। দ্বিতীয় বিগ্রহপালের সময় পাল রাজাদের শাসন ক্ষমতা কেবল গৌড় ও তার আশপাশেই সীমাবদ্ধ ছিল। এসব দুর্বল রাজার সময়ে উত্তর ভারতের চন্দেল্ল ও কলচুরি বংশের রাজাদের আক্রমণে পাল সাম্রাজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে, এ সময়ে পাল সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে উত্তর-পশ্চিম বাংলার অংশ বিশেষে কম্বোজ রাজবংশের উত্থান ঘটে।এভাবে পাল সাম্রাজ্য যখন ধ্বংসের মুখে, তখন আশার আলো নিয়ে এগিয়ে এলেন দ্বিতীয় বিগ্রহপালের সুযোগ্য পুত্র প্রথম মহীপাল (আঃ ৯৯৫-১০৪৩ খ্রিঃ)তাঁর জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কীর্তি হলো কম্বোজ জাতির বিতাড়ন এবং পূর্ব বঙ্গ অধিকার করে পাল সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এরপর তিনি রাজ্য বিজয়ে মনোযোগ দেন। তাঁর সাম্রাজ্য পূর্ব বঙ্গ হতে বারানসী এবং মিথিলা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল।সে সময়ে ভারতের দুই প্রবল রাজশক্তি তামিলরাজ রাজেন্দ্র চোল এবং চেদীরাজ গাঙ্গেয়দেবের আক্রমণ হতে তিনি রাজ্যের অধিকাংশ স্থানে স্বীয় আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
রামপাল (খ্রিঃ ১০৮২-১১২৪ খ্রি)বরেন্দ্র অঞ্চল যখন কৈবর্ত্যদের দখলে তখন পাল সিংহাসনে আরোহণ করেন দ্বিতীয় মহীপালের ছোট ভাই দ্বিতীয় শূরপাল (আনু: ১০৮০-১০৮২ খ্রিঃ)।
অতঃপর তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা রামপাল (খ্রিঃ ১০৮২-১১২৪ খ্রি) সিংহাসনে বসেন। তিনিই ছিলেন পাল বংশের সর্বশেষ সফল শাসক। প্রাচীন বাংলার কবি সন্ধাকর নন্দী রচিত ‘রামচরিত’ হতে রামপালের জীবন কথা জানা যায়। রামপাল রাজ্যভার গ্রহণ করেই বরেন্দ্র উদ্ধার করতে সচেষ্ট হন। এ বিষয়ে রামপালকে সৈন্য, অস্ত্র আর অর্থ দিয়ে সাহায্যে এগিয়ে আসেন রাষ্ট্রকূট, মগধ, রাঢ় দেশসহ চৌদ্দটি অঞ্চলের রাজা। যুদ্ধে কৈবর্তরাজ ভীম পরাজিত ও নিহত হন।
এরপর তিনি বর্তমান মালদহের কাছাকাছি ‘রামাবতি’ নামে নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। পরবর্তী পাল রাজাদের শাসনামলে রামাবতিই সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। পিতৃভূমি বরেন্দ্রে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি মগধ, উড়িষ্যা ও কামরূপের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। পাল বংশের দুর্ভাগ্য রামপালের পরবর্তী শাসকগণ ছিলেন অত্যন্ত দুর্বল। ফলে তাঁদের পক্ষে পালবংশের হাল শক্ত হাতে ধরা সম্ভব ছিল না।
রামপালের পর কুমারপাল (আঃ ১১২৪-১১২৯খ্রিঃ), তৃতীয় গোপাল (১১২৯-১১৪৩ খ্রিঃ) ও মদনপাল (আঃ ১১৪৩-১১৬১ খ্রিঃ) একে একে পাল সিংহাসনে বসেন। এ সময় যুদ্ধ বিগ্রহ লেগেই থাকত। অবশেষে দ্বাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে বিজয় সেন পাল সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটিয়ে বাংলায় সেন বংশের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
কান্তিদেবের রাজ্য :দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার হরিকেল জনপদে নবম শতকে একটি স্বাধীন রাজ্যের উদ্ভব ঘটে। এ রাজ্যের রাজা ছিলেন কান্তিদেব। দেব রাজবংশের সঙ্গে কান্তিদেবের কোনো সম্পর্ক ছিল কি-না তা জানা যায় না। তাঁর পিতা ছিলেন ধনদত্ত ও পিতামহ ভদ্রদত্ত। বর্তমান সিলেট কান্তিদেবের রাজ্যভুক্ত ছিল। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল বর্ধমানপুর। বর্তমানে এ নামে কোনো অঞ্চলের অস্তিত্ব নেই। এ সময়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্র বংশ বলে পরিচিত নতুন এক শক্তির উদয় হয়। কান্তিদেবের গড়া রাজ্যের পতন হয় এ চন্দ্র বংশের হাতে।
চন্দ্রবংশ :দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার সবচেয়ে শক্তিশালী স্বাধীন রাজবংশ ছিল চন্দ্র বংশ। দশম শতকের শুরু হতে একাদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দেড়শত বছর এ বংশের রাজারা শাসন করেন। চন্দ্রবংশের প্রথম নৃপতি পূর্ণচন্দ্র ও তৎপুত্র সুবর্ণচন্দ্র সম্ভবত রোহিতগিরির ভূ-স্বামী ছিলেন। সুবর্ণচন্দ্রের পুত্র ত্রৈলোক্যচন্দ্রই এ বংশের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর উপাধি ছিল ‘মহারাজাধিরাজ’। ত্রৈলোক্যচন্দ্র হরিকেল, চন্দ্রদ্বীপ (বরিশাল ও পার্শ্ববর্তী এলাকা), বঙ্গ ও সমতট অর্থাৎ সমগ্র পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় নিজ বংশের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। লালমাই পাহাড় ছিল চন্দ্র রাজাদের মূল কেন্দ্র। এ পাহাড় প্রাচীনকালে রোহিতগিরি নামে পরিচিত ছিল। আনুমানিক ত্রিশ বছরকাল (৯০০-৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি রাজত্ব করেন।
ত্রৈলোক্যচন্দ্রের সুযোগ্য উত্তরাধিকারী ছিলেন তাঁর পুত্র শ্রীচন্দ্র। তাঁহার শাসনামলে চন্দ্র বংশের প্রতিপত্তি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছায়। তিনি নিঃসন্দেহে বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। তিনি ‘পরমেশ্বর পরম ভট্টারক মহারাজাধিরাজ’ উপাধি ধারণ করেছিলেন। তাঁর রাজ্য দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা ছাড়াও উত্তর-পূর্ব কামরূপ ও উত্তরে গৌড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে তিনি তাঁর রাজধানী গড়ে তোলেন। শ্রীচন্দ্র প্রায় ৪৫ বছর (আনু: ৯৩০-৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ) শৌর্যবীর্যের সহিত রাজত্ব করেন।শ্রীচন্দ্রের পুত্র কল্যাণচন্দ্র (আনু: ৯৭৫-১০০০ খ্রিষ্টাব্দ) ও পৌত্র লডহচন্দ্র (আনু: ১০০০-১০২০ খ্রিষ্টাব্দ) চন্দ্র বংশের গৌরব অক্ষুণ্ন রেখেছিলেন। লডহচন্দ্রের পুত্র গোবিন্দচন্দ্র ছিলেন শেষ চন্দ্র রাজা। তাঁর রাজত্বকালে চোলরাজ রাজেন্দ্র চোল ও কলচুরিরাজ কর্ণ বঙ্গ আক্রমণ করেন। এই দুই বৈদেশিক আক্রমণ চন্দ্র রাজার ক্ষমতা হ্রাস করে তাদের শাসনের পতন ঘটায়।
প্রতিবেদকের নাম : মনিরা খাতুনরোল নং : ০১প্রতিবেদনের ধরন : প্রাতিষ্ঠানিক,প্রতিবেদনের শিরোনাম : প্রাচীন বাংলার রাজা/ রাজবংশসমূহের বংশানুক্রমিক তালিকা তৈরি করে ঐ যুগের শাসন ব্যবস্থার একটি প্রতিবেদনপ্রতিবেদন তৈরির স্থান : সিলেটতারিখ : ০১/১০/২০২১ ইং ।
Class 9 18th week Bangladesh history and world civilization Assignment 2021
Class 9 18th week Bangladesh history and world civilization Assignment Answer 2021
Class Nine 18th Week Science Group Bangladesh history and world civilization Subject Assignment Answer 2021সামাজিকীকরণের ধারণা ব্যাখ্যা
সামাজিকীকরণ বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝায় যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানব শিশু সমাজের একজন কাঙ্ক্ষিত পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে গড়ে ওঠে। সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিসের মতে, ‘সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। একান্তই ইন্দ্রিয় সর্বস্ব প্রাণী হিসেবে মানব শিশুর জন্ম। ইন্দ্রিয় দ্বারা তাড়িত হলেও ধীরে ধীরে সে নানা ভাবে নানা প্রক্রিয়ায় একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া একটি জীবনব্যাপী এবং বহুমুখী প্রক্রিয়া।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ পুরোপুরি সামাজিক মানুষ হিসেবে পরিণত হয়।
এই প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিস এর সংজ্ঞাটি যথার্থ – ব্যক্তি পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়া ছাড়া ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব লাভে ব্যর্থ হয় এবং সমাজে সে এক জন যোগ্য ও উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না।” সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা মানব শিশু ক্রমশ ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। অগবার্ন ও নিমকফ বলেন, ‘সামাজিকীকরণ ছাড়া সমাজে জীবনযাপন একেবারেই সম্ভব নয় এবং সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি তার গোষ্ঠীর সঙ্গে মেলামেশার সামাজিক মূল্য বজায় রাখে।’সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানব শিশু ক্রমেই ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। অর্থাৎ যে সামাজিক প্রক্রিয়াকে মানুষের সামাজিক প্রগতির উন্মেষ, বিকাশ হয় তাকেই সামাজিকীকরণ বলা হয়।সামাজিকীকরণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে। নিম্নে সামাজিকীকরণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা আলোচনা করা হলো।
পরিবার : সামাজিকীকরণের কতগুলো মাধ্যম রয়েছে। তার মধ্যে পরিবারের ভূমিকাই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়ে থাকে, শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথে বংশগতি কাঁচামাল জোগায়, সংস্কৃতি নকশা জোগায় এবং পরিবারে পিতা-মাতা কারিগর হিসেবে কাজ করেন। কারণ শিশুর দৈহিক, মানসিক, পার্থিব ও অপার্থিক যাবতীয় প্রয়োজন মেটায় পরিবার। কীভাবে কথা বলতে হবে, নিজের আবেগ কীভাবে প্রকাশ করা যায়, তা শিশু পরিবার থেকে শিক্ষালাভ করে। খেলার সঙ্গী : শিশুর সামাজিকীকরণে তার সঙ্গী বা খেলার সঙ্গীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। শিশু তার খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে মেলামেশা করলে তার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি পরিস্ফুট হয়। সে স্বাবলম্বী হতে শেখে।ধর্ম : ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। শৈশবকাল থেকে যে ব্যক্তি যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ব্যক্তি সেই ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে লালিত হয় এবং সেই ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তীকালে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলিত হয়। ধর্ম মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধ তথা সত্যবাদিতা, কর্তব্যপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণে গুণান্বিত হতে শিক্ষা দেয়। এককথায়, ধর্মীয় আচর-অনুষ্ঠান ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের সভ্যরা যাতে সামাজিক মূল্য, সামাজিক আদর্শ, সামাজিক অভ্যাসগুলো আয়ত্ত করতে পারে সেজন্য প্রত্যেক সমাজ প্রতিটি সভ্যকে নির্দিষ্ট ভূমিকা পালনের শিক্ষাদান করে। সমাজ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানদান করে।কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আমাদের সামাজিকীকরণকে যেভাবে প্রভাবিত করছেগণমাধ্যম : সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যমগুলো হলো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। তবে এগুলো সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে।মন্তব্য : বিবৃত আলোচনাকে বিচার ও বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি, সামাজিকীকরণের বাহন হিসেবে পরিবার, খেলার সঙ্গী, ধর্ম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আর গণমাধ্যমগুলো সামাজিকীকরণে গৌণ ভূমিকা পালন করে।
যে সকল প্রতিষ্ঠানে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সাধিত হয় তার মধ্যে সর্বপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হলো পরিবার। নিচে পরিবারের ভূমিকার বিবরণ দেওয়া হল:-
বলা হয়ে থাকে, শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথে বংশগতি মূল উপাদান যোগায়, সংস্কৃতির নকশা অঙ্কন করে এবং পিতামাতা কারিগর হিসেবে কাজ করে।একটি শিশু তার দৈহিক, মানসিক এবং বস্তুগত ও অবস্তুগত যাবতীয় প্রয়োজন পরিবার থেকেই মেটায়। পরিবারেই শিশুর চিন্তা, আবেগ ও কর্মের অভ্যাস গঠিত হয়। একটি শিশুর সুকোমল বৃত্তিগুলি এবং সুপ্ত প্রতিভা পরিবারের মাধ্যমেই বিকাশ লাভ করে।শিশু পরিবার থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও গ্রহণ করে, পরিবার থেকেই একটি শিশু আচার-আচরণ, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে একজন যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে।যে কারণে সামাজিকীকরণে বর্তমান পরিবেশ প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছেকরোনাকালে ব্যক্তি, বিশেষ করে শিশু-কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে সামাজিকীকরণের যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, বিগত প্রায় ৯০ বছরের মধ্যে এমনটি ঘটেনি। করোনাভাইরাস পৃথিবীব্যাপী মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এ রোগের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্যগত ও মনস্তাত্ত্বিক অভিঘাত নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক গবেষণা হয়েছে। তবে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার ওপর এর অভিঘাত নিয়ে এখনো কোনো গবেষণা হয়েছে বলে জানা নেই।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা, প্রকাশিত সংবাদ ও সাধারণ পর্যবেক্ষণ থেকে বলা যায়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, লকডাউন বা শাটডাউন ঘোষণা, অফিস-আদালতসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার কারণে অনেকেই ঘরে থাকতে বাধ্য। অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে, অসংখ্য মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এসব থেকে সৃষ্ট ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও মানসিক চাপের বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবার ও ছেলেমেয়েদের ওপর।
১. পরিবার, বিশেষ করে বাবা-মা যেহেতু শিশুর সামাজিকীকরণের প্রথম স্থান; সেই পরিবারেই যদি উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা, ঝগড়া, দ্বন্দ্ব কাজ করে, তাহলে তার প্রভাব শিশুর ওপর পড়তে বাধ্য। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাকালে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পরিবারে এখন উপরোক্ত সমস্যগুলো বিরাজমান। সুতরাং, শিশুর স্বাভাবিক যে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া, করোনাকালে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। এ ছাড়া এ সময়ে যেসব নতুন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, তারাও যথোপযুক্ত সামাজিকীকরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একমাত্র বাবা-মা ছাড়া অন্য কোনো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তাদের কোনো পরিচয় ঘটছে না এতে তারা পরিবারের অন্য সদস্যদের আবেগ-অনুভূতি ও স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কাজেই এদিক থেকে বলা যায়, নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রেও সামাজিকীকরণ ব্যাহত হচ্ছে।কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আমাদের সামাজিকীকরণকে যেভাবে প্রভাবিত করছে
২. শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সামাজিকীকরণে তাদের সঙ্গী বা খেলার সাথীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ভয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে শিশু বা ছেলেমেয়েরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা আগের মতো একত্রে খেলাধুলা করা বা অন্য কোনো সৃজনশীল কাজে যোগ দিতে পারছে না। এর ফলে তাদের যথাযথ সামাজিকীকরণে ব্যাঘাত ঘটছে।৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো শিশুর সামাজিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক ভাব বিনিময় ও মিথস্ক্রিয়া হয় এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখে, যা তার সামাজিকীকরণে সহায়ক হয়। সমাজের সদস্য হিসাবে যাতে সামাজিক মূল্যবোধ, সামাজিক আদর্শ, সামাজিক অভ্যাসগুলো আয়ত্ত্ব করতে পারে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ শিক্ষাই শিক্ষা দেয়। কিন্তু প্রায় দেড় বছরকাল ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের মানসিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।৪. ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের জীবন নানাভাবে প্রভাবিত করে। শৈশবকাল থেকে যে ব্যক্তি যে ধর্মে বিশ্বাসী, সে ব্যক্তি সেই ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে লালিত হয় এবং সেই ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তীকালে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলিত হয়। ধর্ম মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধ তথা সত্যবাদিতা, কর্তব্যপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণে গুণান্বিত হতে শিক্ষা দেয়। এক কথায়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু করোনাকালে অধিকাংশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় এবং কোনো কোনো সময় করোনার দ্রুত বিস্তার রোধে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বিধিনিষেধ আরোপ করায় এর প্রভাব ছেলেমেয়েদের ওপর পড়েছে, যা তাদের যথাযথ সামাজিকীকরণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।৫. সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা লক্ষ করা যায়। গণমাধ্যম হলো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। তবে এগুলো সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যম, বিশেষ করে টেলিভিশনে করোনা সংক্রান্ত খবর দেখে ও শুনে ছেলেমেয়েদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ পড়ছে, যা তাদের প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতির মধ্যে রাখে এবং তাদের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণে বাধা দিচ্ছে।
চলমান পরিস্থিতিতে সামাজিক জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তনচলমান কোভিড পরিস্থিতিতে সামাজিক জীবনে নেতিবাচক পরিবর্তনের পাশাপাশি রয়েছে ইতিবাচক পরিবর্তন। যেমন-
জরুরি কাজে বাইরে বের হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করার নির্দেশ আসে। জীবন যাত্রার সাথে যুক্ত হয় নতুন কিছু অভ্যাস। যার মধ্যে রয়েছে বার বার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, চোখে-মুখে-নাকে হাত না দেয়া ইত্যাদি। এগুলো তো গেলো নিতান্তই ব্যক্তিগত জীবনের কিছু পরিবর্তন। এছাড়াও এমন কিছু পরিবর্তন এসেছে যা হয়তো এক মাস আগে মানুষ চিন্তাও করতো না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাড়িতে বসে অফিস করে। বাইরে গেলেও ঘরে ফিরে দ্রব্যাদি জীবাণুমুক্ত করা, এবং যে বাইরে যায় তাকেও গোসল করতে হয়- এই পরিবর্তনগুলোই অনেক বেশি চোখে পড়ার মতো। যার মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারটি অনুসরণীয় হচ্ছে।
কোভিড পরিস্থিতিতে সামাজিক জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো নিম্নরূপ-- সামাজিক দূরত্ব সচেতনতা,
- দারিদ্র্য বিমোচন,
- ধর্মীয় রীতি-নীতির সম্প্রসারণ তথা প্রয়োগ,
- অপরকে সহযোগিতার মনোভাব,
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা,
- স্বাস্থ্য সচেতনতা,
- তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার,
- প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও নিজস্ব পর্যবেক্ষণ/ মতামত প্রদানবর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবার ছাড়া সামাজিকীকরণে কোনো উপাদান ভূমিকা রাখতে পারছে না। যদিও গণমাধ্যমে সবাই জড়িয়ে পড়ছে কিন্তু তা তাদের নেতিবাচক সামাজিকীকরণের বিস্তার করছে। এক্ষেত্রে একটি শিশুর সুষ্ঠু সামাজিকীকরণের জন্য সকল উপাদানকে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। আবার, বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বলা যায়, এটি একেবারেই অসম্ভব। কারণ করোনা ভাইরাসের কারনে সবাই ঘরের মধ্যে আবদ্ধ। তাই, তাদের সুষ্ঠু বিকাশের স্বার্থে অন্যান্যা উপাদান নিজ থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে সামাজিকীকরণের প্রভাব ব্যাপক বিস্তার করে। তাই, যতদূর সম্ভব তা খুলে দিয়ে তাদের বিকাশের কথা বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু তা যদি সম্ভব না হয়, বিকল্প ব্যবস্থার কথা চিন্তা করতে হবে।উপসংহারসামাজিকীকরণ সমাজতাত্ত্বিক ও মনোবৈজ্ঞানিক একটি প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় একজন ব্যক্তিকে তার জন্মের পর থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে টিকে থাকার প্রয়োজনে অনেক কিছু শিখতে হয়। এ শিক্ষণ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে বাবা-মা, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, খেলার সাথী ও সমবয়সি দল, বন্ধু, প্রতিবেশী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, কর্মস্থান এবং চেনা-অচেনা অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি তার নিজস্ব ভাষা, পারিবারিক নিয়ম-কানুন, আদব-কায়দা, আচার-আচরণ, সামাজিক রীতিনীতি, সামাজিক শৃঙ্খলা, প্রথা-পদ্ধতি, মূল্যবোধ ইত্যাদি আয়ত্ত করে সমাজের উপযোগী একজন সদস্য হয়ে ওঠেন। জীবনব্যাপী চলতে থাকা এ শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে সামাজিকীকরণ বলে। সামাজিকীকরণ যথাযথ না হলে শিশু বা ব্যক্তির মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সে ক্ষেত্রে সে অনেক অসামাজিক আচরণ করতে পারে। ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম ঘটলে তার প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে।
সামাজিকীকরণের ধারণা ব্যাখ্যা
সামাজিকীকরণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আমাদের সামাজিকীকরণকে যেভাবে প্রভাবিত করছে
- সামাজিক দূরত্ব সচেতনতা,
- দারিদ্র্য বিমোচন,
- ধর্মীয় রীতি-নীতির সম্প্রসারণ তথা প্রয়োগ,
- অপরকে সহযোগিতার মনোভাব,
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা,
- স্বাস্থ্য সচেতনতা,
- তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার,
- প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।